বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান চর্চা ও বিকাশের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিশ্বজ্ঞান বলতে বোঝায় বহুমুখী জ্ঞান। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিপুল জ্ঞান-ভাণ্ডার থেকে যোগ্য ব্যক্তি তাঁর আগ্রহ, রুচি ও যোগ্যতা অনুযায়ী বিশেষ জ্ঞান অর্জনে ব্রতী হন। জ্ঞানের সকল শাখায় পারদর্শী হওয়া সম্ভব নয়। তাই বিভিন্ন শাখা থেকে মনোনীত শাখাতেই উচ্চ শিক্ষার শিক্ষার্থীরা জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী হন এবং যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারলে সে শাখায় ভর্তি হয়ে বিশেষায়িত জ্ঞান অর্জনে সচেষ্ট হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য। এখানেও উচ্চ শিক্ষার নানা শাখায় জ্ঞান অর্জনের ব্যবস্থা রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সুতরাং প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের জ্ঞানের মিলনের মধ্য দিয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞানের আলোকে শিক্ষার্থীদের আলোকিত করার উদ্দেশ্য নিয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তিনটি অনুষদের অধীনে নিম্নলিখিত বিভাগগুলো নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করে। অনুষদগুলো হলো: কলা অনুষদ; বিজ্ঞান অনুষদ এবং আইন অনুষদ। অনুষদগুলোর অধীনে চৌদ্দটি বিভাগ হলো:
কলা অনুষদ:
- ইংরেজি
- স্যান্সক্রিটিক স্টাডিজ এবং ms¯‹…Z I evsjv
- dviwm I D`y©
- `k©b
- BwZnvm
- Aviwe I BmjvwgK ÷vwWR
- A_©bxwZ I ivRbxwZ
- wkÿv
- MwYZ
- evwYR¨
- wkÿvbxwZ
বিজ্ঞান অনুষদ:
- রসায়ন
- পদার্থ বিজ্ঞান
এবং
আইন অনুষদ: আইন
দেখা যায়, সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের গুরুত্ব অনুধাবন করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নীতিনির্ধারকগণ প্রতিষ্ঠালগ্নে স্যান্সক্রিটিক স্টাডিজ এবং সংস্কৃত ও বাংলা নামে বিভাগটি প্রতিষ্ঠা করেন।
বিভাগের শুরুতে শিক্ষাক্রমের দুটি ধারা ছিল। ১. স্যান্সক্রিটিক স্টাডিজ এবং ২. Sanskrit and Bengali. প্রতিটি ধারার সিলেবাস ছিল ভিন্ন এবং ডিগ্রিও প্রদান করা হতো ভিন্নভাবে। স্যান্সক্রিটিক স্টাডিজ ধারার সিলেবাসে ছিল সংস্কৃত ব্যাকরণ, সংস্কৃত গদ্য ও পদ্য, সংস্কৃত নাটক, বৈদিক ও সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস ইত্যাদি এবং Sanskrit and Bengali ধারার সিলেবাসে ছিল সংস্কৃত ব্যাকরণ, ক্ল্যাসিক্যাল সংস্কৃত সাহিত্য এবং প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক বাংলা সাহিত্য প্রভৃতি।
এ থেকে বোঝা যায় তখন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে পাঠদানের ক্ষেত্রে সংস্কৃত বিষয়কে সচেতনভাবেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।
সংস্কৃত ভাষার প্রতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুরাগ লক্ষণীয়। ‘আশ্রমের রূপ ও বিকাশ’ গ্রন্থে তিনি বলেছেন: “ভারতবর্ষের চিরকালের যে চিত্ত সেটার আশ্রয় সংস্কৃত ভাষায়। এই ভাষা তীর্থপথ দিয়ে আমরা দেশের চিন্ময় প্রকৃতির স্পর্শ পাব, তাকে অন্তরে গ্রহণ করব, শিক্ষার এই লক্ষ্য মনে আমার দৃঢ় ছিল। ইংরেজি ভাষার ভিতর দিয়ে আমরা নানা জ্ঞাতব্য বিষয় জানতে পারি, সেগুলি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু সংস্কৃত ভাষার একটা আনন্দ আছে, সে রঞ্জিত করে আমাদের মনের আকাশকে, তার মধ্যে আছে গভীর বাণী, বিশ্বপ্রকৃতির মতোই সে আমাদের শান্তি দেয় এবং চিত্তকে মর্যাদা দিয়ে থাকে।”
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘প্রাচীন সাহিত্য’ গ্রন্থে ‘কাদম্বরী’ শীর্ষক প্রবন্ধে বলেছেন: “সকলেই জানেন ভাব সত্যের মতো কৃপণ নহে। সত্যের নিকট যে ছেলে কানা ভাবের নিকট তাহার পদ্মলোচন হওয়া কিছুই বিচিত্র নহে। ভাবের সেই রাজকীয় অজস্রতার উপযোগী ভাষা সংস্কৃত ভাষা।”
সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রবন্ধ থেকে উল্লেখ করার কারণ এই যে এর মধ্যে সংস্কৃত শিক্ষার গুরুত্ব প্রকাশ পেয়েছে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যও রবীন্দ্র ভাষ্যের অনুরূপ।
এছাড়া প্রাচীন ভারতের সকল প্রকার জ্ঞানতত্ত্ব সংস্কৃত ভাষায়ও প্রকাশিত হয়েছে। দর্শন, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস প্রভৃতি বিষয়ের আকর গ্রন্থগুলো প্রধানত সংস্কৃত ভাষায় রচিত।
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ রচনায় সংস্কৃত ভাষার ব্যাকরণের পারিভাষিক শব্দাবলি ও পদ্ধতি গৃহীত হয়েছে। বাংলা ভাষা সরাসরি সংস্কৃত ভাষার দুহিতা না হলেও সে ভাষা বাংলার মাতামহীর ভগ্নী স্থানীয়া। অর্থাৎ যে প্রাকৃত ও অপভ্রংশের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার সৃষ্টি সে ভাষা থেকেই সংস্কৃত ভাষারও সৃষ্টি। তাছাড়া বাংলা ভাষায় বিপুল সংখ্যক সংস্কৃত শব্দ অবিকল গৃহীত হয়েছে।
সংস্কৃত বিভাগের উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ক্ল্যাসিক সংস্কৃত ভাষার চর্চা, সংরক্ষণ ও প্রসার ঘটানো। নাট্যকলার ক্ষেত্রেও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে সংস্কৃত ভাষায় রচিত ভরতের নাট্যশাস্ত্রের । নাট্যকলার এমন কোনো বিষয় নেই, যা ভরতের নাট্যশাস্ত্রে আলোচিত হয়নি। এ কারণে ভরতের নাট্যশাস্ত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পারফর্মিং আর্ট ও নৃত্যকলা বিভাগের পাঠ্য বিষয়।
তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ের জন্মই হতো না, যদি না সংস্কৃত ভাষার সঙ্গে পাশ্চাত্যের ভাষা বিজ্ঞানীদের পরিচয় ঘটতো। সেদিক থেকে ভাষা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও সংস্কৃত ভাষা চর্চার গুরুত্ব রয়েছে। এছাড়া সংস্কৃত সাহিত্য নৈতিক শিক্ষার এক মহা-আকর। নৈতিকতার যে অবক্ষয় আজ দেখা যাচ্ছে, সেখানেও পঞ্চতন্ত্রের নীতিমূলক আখ্যান, হিতোপদেশ, চাণক্য ও ভর্তৃহরির নীতিমূলক রচনা আমাদের নৈতিক শিক্ষা দেয় ও মনকে উন্নত করে, অবক্ষয়ের পথ রোধ করে, আবদ্ধ করে প্রীতির বন্ধনে।
উল্লিখিত আলোচনার মধ্যে সংস্কৃত বিভাগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হয়েছে। সংস্কৃত বিভাগের লক্ষ্য হচ্ছে নীতিজ্ঞান সম্পন্ন সমাজ প্রতিষ্ঠা, উদ্দেশ্য হচ্ছে উচ্চ মানের একটি ধ্রুপদী (Classic) ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা, সংরক্ষণ ও বিকাশ।
সংস্কৃত বিভাগ সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সাধনে একনিষ্ঠভাবে ব্রতী রয়েছে।
University is an educational institution established for the practice and development of cosmology. Cosmology refers to multifaceted knowledge. From this vast body of knowledge of the university, the deserving person becomes a novice in acquiring special knowledge according to his interests, tastes and qualifications. It is no longer possible to become proficient in all branches of knowledge. Therefore, the students of higher education are interested in acquiring knowledge in the nominated branch from different branches and if they can show their qualifications, they are admitted in that branch and try to acquire specialized knowledge.
The same is true in the context of Dhaka University. It was decided to make arrangements for acquiring knowledge in various branches of higher education in here too.
Therefore, the University of Dhaka was established with the aim of enlightening the students in the light of perfect knowledge through the fusion of Eastern and Western knowledge. The Dhaka University authorities have officially started teaching activities with the departments written below under three faculties. The categories are: Faculty of Arts; Faculty of Science and Faculty of Law. Fourteen departments were conducted by the faculties.
Faculty of Arts:
(1) English
(2) Sanskritic Studies and Sanskrit & Bengali
(3) Persian and Urdu
(4) Philosophy
(5) History
(6) Arabic and Islamic Studies
(6) Economics and Politics
(6) Education
(9) Mathematics
(10) Commerce
(11) Principles of Education
Faculty of Science:
(1) Chemistry
(2) Physics
And
Faculty of Law: Law
It is noticeable that the authorities acknowledged the importance of Sanskrit language and literature and decided to open a department in the name of Sanskritic Studies and Sanskrit and Bengali. There were two streams in this department, one was Sanskritic Studies and the other was Sanskrit and Bengali. Each stream had its own syllabus and individual degree. Sanskrit grammar, Sanskrit Prose and poetry, Sanskrit Drama, History of vedic and Sanskrit literature etc. were included in Sanskritic studies and the syllabus of Sanskrit and Bengali was partly Sanskrit grammar, Sanskrit classical literature and partly Ancient-Middle-Modern Bengali literature.
From this, it is understood that Sanskrit was consciously given importance in teaching Bengali language and literature at that time.
Rabindranath Tagore’s respect and affection to the Sanskrit language is remarkable. He said in the book ‘The form and development of the ashrama’:
“Sanskrit is the refuge of the eternal heart of Indian Continent. With this language pilgrimage we will get a touch of soulful nature of the country, we will accept it in our hearts, this goal of education was firmed in my mind. Through the English language we can learn many things, these are very necessary. But the Sanskrit language has a joy, it paints the sky of our minds, it has deep words in it, like the nature of the world, it gives us peace and gives dignity to the heart’’.
Rabindranath Tagore also said in his essay entitled ‘Kadambari’ of his book titled ‘Ancient Literature’: “Everyone knows that ideas are not as stingy as truth. It is not strange for a boy who is blind to the truth, but of lotus eyes to the ideas. Sanskrit is the suitable language for that royal abundance of the ideas’’.
The reason of mentioning about Sanskrit language and literature from Rabindranath Tagore’s essays is, that the importance of learning Sanskrit is described in these and the aims and objectives of the Sanskrit department of Dhaka University are similar to the commentary of Rabindranath.
Besides, all kinds of epistemology of ancient India have also been published in Sanskrit. Books on philosophy, sociology, history, etc. are mainly written in Sanskrit.
Moreover, various technical words and methods of Sanskrit grammar have been adopted in composing Bengali grammar. Although Bengali is not a direct descendant of Sanskrit, it is to be apparent as sister of grandmother of Bengali language. That is, Sanskrit language was also formed from the language, from which Bengali was formed through Prākrit and Apabhraṃśa. Moreover, a large number of Sanskrit words have been recognized in Bengali.
The purpose of the Sanskrit department is to practice, preserve and spread of one of the major classical language of the world. Bharata’s Nāṭyaśāstra written in Sanskrit is also of special importance in the field of drama. There is no such thing of drama, which is not discussed in Bharata’s Nāṭyaśāstra. That is why Bharata’s Nāṭyaśāstra is included in the Department of Performing Arts and Dance departments of Dhaka University.
The subject of comparative linguistics would not have been born without the introduction of Sanskrit to Western linguists. Hence, practicing of Sanskrit language is also important in the field of linguistics. Besides, Sanskrit literature is a great source of moral education. The moral lessons of Paňcatantra, Hitopadesa, Cāṇakya and Bhatṛhari can help us to make and maintain a moral society by increasing our ethical knowledge and can bind us in the bond of eternal love.
The vision and mission of the Sanskrit department have been reflected in the above mentioned discussions. The aim of the Sanskrit department is to establish a society with ethics and to practice, preserve and develop of a classical language and literature.
The Sanskrit department is devoted to the pursuit of that goal and purpose.